লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম জেনে নিন

লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করবো এ আর্টিকেলে। বাংলাদেশের প্রাচীন সংস্কৃতি ও রীতিনীতির মধ্যে লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম অন্যতম। আমাদের এই আর্টিকেলে আপনি জানতে পারবেন এই নিয়মের বিস্তারিত পদ্ধতি, ঐতিহ্য, এবং এর সামাজিক গুরুত্ব।
লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম জেনে নিন
এ আর্টিকেলটি পড়ে আরো জানতে পারবেন লাশ করবে রাখার দোয়া। বিস্তারিত জানতে সম্পুর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।কোনো অংশ মিস করবেন না।

ভূমিকা:

মৃত্যু হল জীবনের অনিবার্য পরিণতি এবং প্রিয়জনের শেষ বিদায়ের সময় সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা গুরুত্বপূর্ণ। লাশ খাটিয়া বহন করার নিয়ম হল একটি ঐতিহ্যবাহী প্রক্রিয়া যা মৃত ব্যক্তির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানোর উপায়। এই প্রক্রিয়াটি বিভিন্ন সংস্কৃতিতে ভিন্ন ভাবে পালিত হয়, তবে এর মূল উদ্দেশ্য একই - মৃত ব্যক্তির প্রতি সম্মান প্রকাশ করা।

 বাংলাদেশে, লাশ খাটিয়া বহন করার নিয়ম অনুসরণ করে কিছু বিশেষ ধাপ রয়েছে। প্রথমে, লাশকে সুসজ্জিত করা হয় এবং একটি খাটিয়ায় স্থাপন করা হয়। এরপর, পরিবারের সদস্য ও বন্ধুরা খাটিয়াটি কাঁধে করে শ্মশান বা কবরস্থানে নিয়ে যান। এই পথচলাটি প্রায়শই একটি শোক মিছিলের রূপ নেয়, যেখানে মৃত ব্যক্তির জীবনের স্মৃতি ও অবদানের কথা স্মরণ করা হয়। 

এই প্রক্রিয়াটি শুধুমাত্র একটি শারীরিক ক্রিয়া নয়, বরং এটি একটি আধ্যাত্মিক ও সামাজিক অনুষ্ঠান যা মৃত্যুকে একটি সম্মানজনক ও মর্যাদাপূর্ণ পরিণতি হিসেবে গ্রহণ করে।এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, সমাজের সদস্যরা মৃত্যুকে একটি স্বাভাবিক ও অনিবার্য ঘটনা হিসেবে মেনে নেয় এবং মৃত ব্যক্তির প্রতি তাদের শেষ শ্রদ্ধা জানায়। 

এই প্রথা মানুষকে জীবনের অস্থায়িত্ব ও মৃত্যুর সাথে মোকাবিলা করার শক্তি দেয়। আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আরো ়আলোচনা করবো।লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম। লাশ কবরে রাখার দোয়া। কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া আরবি। কবরে মাটি দেওয়ার দলিল কি। কবরে মাটি দেওয়ার বিধান। কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া মাসিক আল কাউসার। কবরে সালাম দেওয়ার দোয়া। কবর জিয়ারতের দোয়া ও মোনাজাত। পিতা মাতার কবর জিয়ারতের দোয়া।

লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম জেনে নিন

প্রত্যেক মানুষকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে। তবে মানুষ মারা যাবার পর লাশ খাটিয়া বহন করার নিয়ম সম্পর্কে অনেকের সঠিক ধারনা নেই। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল। এখন আলোচনা করবো লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম। চলুন শুরু করা যাক।বাংলাদেশের প্রাচীন সংস্কৃতি ও রীতিনীতির মধ্যে লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম অন্যতম।

 এই নিয়ম কেবল মৃত ব্যক্তির শেষ যাত্রার একটি অংশ নয়, বরং এটি সম্মান ও শ্রদ্ধার প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়। লাশের খাটিয়া বহন করার প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপ: প্রথমে, মৃত ব্যক্তির শরীরকে গোসল করানো হয় এবং পবিত্র কাপড়ে মোড়ানো হয়। এরপর, শরীরকে একটি খাটিয়ায় স্থাপন করা হয়, যা সাধারণত কাঠের তৈরি হয় এবং ফুল দিয়ে সাজানো হয়।

খাটিয়াটি সাধারণত মৃত ব্যক্তির পুরুষ আত্মীয়স্বজন দ্বারা বহন করা হয়। বহনকারীরা খাটিয়ার চার কোণায় দাঁড়িয়ে থাকেন এবং সমন্বয় সাধন করে খাটিয়াটি তুলে ধরেন। এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার সময় সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে চলাচল করা হয়। খাটিয়া বহন করে মৃত ব্যক্তিকে কবরস্থানে বা শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। 

এই পথে সাধারণত ধর্মীয় মন্ত্র পাঠ করা হয় এবং প্রার্থনা করা হয়।এই প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, তবে মূল উদ্দেশ্য একই থাকে - মৃত ব্যক্তির প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা। এই রীতিটি বাংলাদেশের সামাজিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে গভীরভাবে প্রতিষ্ঠিত।

লাশ কবরে রাখার দোয়া জেনে নিন

আপনারা হয়তো গুগল বা ইউটিউব দেখেও লাশ করবে রাখার দোয়া শিখতে পারেননি। তাদের জানতে আমার এই আর্টিকেল। এর আগে আমরা জেনেছি লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম। এখন জানতে পারবেন লাশ করবে রাখার দোয়া। মৃত্যু একটি অনিবার্য সত্য, এবং ইসলামে মৃতদেহ কবরে রাখার সময় বিশেষ দোয়া পড়ার নির্দেশ রয়েছে।

এই দোয়াগুলি মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি এবং মুক্তির জন্য পড়া হয়। ইসলাম ধর্মে, মৃত্যুকে একটি অনিবার্য পরিণতি এবং জীবনের একটি পর্ব হিসেবে দেখা হয়। মৃত্যুর পর, মুসলিম সমাজে মৃতদেহের সম্মানজনক চিকিৎসা এবং কবরে স্থানান্তরের বিশেষ প্রক্রিয়া রয়েছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, কবরে মৃতদেহ রাখার সময় বিশেষ দোয়া।

পড়া হয়, যা মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি এবং পরকালের জন্য সাহায্য করে। হাদিস শরীফ অনুযায়ী, মৃতদেহ কবরে রাখার সময় নিম্নলিখিত দোয়া পড়া হয়: (বিসমিল্লাহি ওয়া আলা মিল্লাতি রাসুলিল্লাহ) অর্থাৎ, "আল্লাহর নামে এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিয়মে (তাঁকে কবরে রাখছি)। এই দোয়াটি মৃতদেহকে কবরে রাখার সময় পড়া হয়, যা মৃত ব্যক্তির আত্মাকে শান্তি।

দেয় এবং পরকালের জন্য সুপ্রস্তুত করে। এই দোয়া পড়ার মাধ্যমে, মুসলিমরা মৃত ব্যক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দয়া এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন। মৃত্যু এবং কবরে রাখার এই মুহূর্তগুলি শুধুমাত্র মৃত ব্যক্তির জন্যই নয়, বরং জীবিতদের জন্যও একটি শিক্ষা। 

এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, জীবন অনিত্য এবং প্রত্যেকেরই একদিন মৃত্যুর সঙ্গে মুখোমুখি হতে হবে। তাই, ইসলামে মৃত্যুর পরের প্রক্রিয়াগুলি শুধুমাত্র মৃত ব্যক্তির জন্য সম্মান প্রদর্শন নয়, বরং জীবিতদের জন্যও একটি আত্ম-সচেতনতার পাঠ।

কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া আরবি জেনে নিন

আর্টিকেলে ইতিমধ্যে আমরা আলোচনা করে আসছি। লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম। এখন জানবো কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া আরবি। মৃত্যু একটি অনিবার্য সত্য, এবং ইসলামে মৃত্যুর পর দাফন প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সম্পন্ন করা হয়।

 কবরে মাটি দেওয়ার সময় বিশেষ দোয়া পড়ার প্রচলন রয়েছে, যা মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি এবং পরকালীন জীবনের জন্য প্রার্থনা করে। কবরে মাটি দেওয়ার সময় পড়ার দোয়াটি হলো সূরা ত্বহা থেকে নেওয়া একটি আয়াত, যা মানুষের সৃষ্টি ও পুনরুত্থানের চক্র সম্পর্কে বলে। আয়াতটি হলো:
{مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيهَا نُعِيدُكُمْ وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرَى}

মিনহা খালাক্নাকুম ওয়া ফিহা নু‘ঈদুকুম ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা"এর বাংলা অনুবাদ হলো:মাটি থেকে আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, তাতেই আমি তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেব, এবং তাতেই তোমাদেরকে আবার বের করব।" এই দোয়াটি মৃত্যুর পর মানুষের জীবনচক্রের একটি পূর্ণতা দেখায় এবং আল্লাহর প্রতি মানুষের সম্পূর্ণ নির্ভরতা বাড়ায়।

কবরে মাটি দেওয়ার দলিল কি জেনে নিন

মুসলিম ব্যাক্তি মৃত্যুবরন করলে তাতে মাটি দেওয়া হয় সবাই জানে। কিন্তু কেন এই কাজটি করা হয় অনেকেই জানেনা। তাদের সঠিক তথ্য দিতে এই আর্টিকেল। প্রথমে জেনেছেন লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম ।এখন জানবেন কবরে মাটি দেওয়ার দলিল কি। কবরে মাটি দেওয়ার প্রথা ইসলামের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রীতি, যা মৃত্যুর পর মানুষের শেষ কৃত্য হিসেবে পালন করা হয়।

এই প্রথার মূলে রয়েছে ইসলামের শিক্ষা এবং মৃত্যুর পর জীবনের প্রতি বিশ্বাস। কবরে মাটি দেওয়ার সময় কিছু বিশেষ দোয়া ও আমল পালন করা হয়, যা মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি এবং পরকালের জন্য দোয়া করার উদ্দেশ্যে করা হয়। কবরে মাটি দেওয়ার সময় পড়া হয় কুরআনের আয়াত "মিনহা খালাক্নাকুম ওয়া ফিহা নু‘ঈদুকুম ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা" (সূরা ত্বহা, আয়াত: ৫৫), যার অর্থ "আমি মাটি থেকে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, আর মাটির মধ্যেই।

তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিব, এবং মাটি থেকেই আমি তোমাদেরকে পুনরায় উঠাবো।এই আয়াতটি মানুষের জীবনচক্র এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের বিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে। ইসলামে, মৃত্যুকে একটি অনিবার্য সত্য হিসেবে দেখা হয়, যা প্রত্যেক প্রাণীর জন্য অবধারিত। কবরে মাটি দেওয়ার মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং তার আত্মার জন্য দোয়া করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি মৃত্যুর পর জীবনের প্রতি বিশ্বাস এবং মানবজীবনের অস্থায়িত্বের স্মরণ করিয়ে দেয়া।

কবরে মাটি দেওয়ার বিধান জেনে নিন

আজকের এই আর্টিকেলে প্রথম থেকে আলোচনা করে আসছি। লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম। এ আর্টিকেলে এখন জানতে পারবেন কবরে মাটি দেওয়ার বিধান সম্পর্কে। মৃত্যু হলো জীবনের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি এবং প্রতিটি সমাজের নিজস্ব সংস্কার ও রীতি রয়েছে মৃতদেহের শেষ কৃত্য সম্পাদনের জন্য। 

বাংলাদেশের মতো মুসলিম-প্রধান দেশে, কবরে মাটি দেওয়ার বিধান ইসলামিক শরিয়াহ অনুসারে নির্ধারিত হয়। ইসলামে, মৃত্যুর পর মৃতদেহকে গোসল দেওয়া, কাফন পরানো এবং নামাজে জানাজা আদায় করার পর কবরে সমাহিত করা হয়। কবরে মাটি দেওয়ার প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত সম্মানজনক এবং মর্যাদাপূর্ণ উপায়ে সম্পন্ন করা হয়।

 মৃতদেহকে ডান পাশে শুইয়ে কিবলার দিকে মুখ করে কবরে রাখা হয় এবং তারপর মাটি দিয়ে কবরটি পূর্ণ করা হয়। কবরে মাটি দেওয়ার সময়, উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে নীরবতা এবং শান্তি বজায় রাখা হয়, এবং মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি মৃত্যুর পর মানব জীবনের সম্মান এবং মর্যাদার প্রতি ইসলামের গভীর শ্রদ্ধার প্রতিফলন করে। 

ইসলামিক শিক্ষা অনুযায়ী, মৃত্যু একটি অন্তরালের শুরু, যেখানে মৃত ব্যক্তি আখিরাতের জীবনে প্রবেশ করে। তাই, কবরে মাটি দেওয়ার বিধান শুধু একটি শারীরিক ক্রিয়া নয়, বরং এটি আত্মার চিরন্তন যাত্রার প্রতি সম্মান জ্ঞাপনের একটি উপায়।

কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া মাসিক আল কাউসার জেনে নিন

গুগল বা বিভিন্ন মাধ্যমে সার্চ দিয়ে মৃত্যু ব্যাক্তির কবর দেওয়া, দোয়া ইত্যাদি সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাননি। আজকে এই আর্টিকেলে আপনাদের সঠিক তথ্য জানাবো। এন আগে জানিয়েছি লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম এ বিষয়ে। এখন জানাবো কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া মাসিক আল কাউসার। মৃত্যু একটি অনিবার্য সত্য, এবং মুসলিম ধর্মমতে, মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা হলো কবর। 

কবরে মাটি দেওয়ার সময় কিছু বিশেষ দোয়া পাঠ করা হয়, যা মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি এবং মুক্তির জন্য প্রার্থনা করে। মাসিক আল কাউসার, যা একটি ইসলামিক প্রকাশনা, এই দোয়াগুলির গুরুত্ব এবং অর্থ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে। মাসিক আল কাউসারের মতে, কবরে মাটি দেওয়ার দোয়া হলো মৃত ব্যক্তির জন্য দু'আ করা, যাতে তার কবর জান্নাতের বাগানের একটি অংশ হয়ে উঠে।

এই দোয়াগুলি কুরআন এবং হাদিস থেকে নেওয়া হয়েছে, এবং এগুলি মুসলিম উম্মাহর মধ্যে প্রচলিত।একটি প্রচলিত দোয়া হলো: (আল্লাহুম্মা আগফির লি হায়্যিনা ওয়া মায়িতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়িবিনা ওয়া সাগিরিনা ওয়া কাবিরিনা ওয়া জাকারিনা ওয়া উনসানা) এই দোয়াটির অর্থ হলো, "হে আল্লাহ, আমাদের জীবিত এবং মৃত, উপস্থিত।

এবং অনুপস্থিত, ছোট এবং বড়, পুরুষ এবং নারীদের ক্ষমা করুন। মাসিক আল কাউসার আরও বলে যে, এই দোয়াগুলি পাঠ করার মাধ্যমে, মুসলিমরা মৃত্যুর পরেও তাদের প্রিয়জনের জন্য ভালোবাসা এবং সম্মান প্রকাশ করে। এটি একটি সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন যা জীবনের চক্র এবং মৃত্যুর পরের জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।

কবরে সালাম দেওয়ার দোয়া জেনে নিন

আর্টিকেলের শুরু থেকে আলোচনা করেছি। লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম। এখন জানবো কবরে সালাম দেওয়ার দোয়া। ইসলাম ধর্মে, কবর জিয়ারত বা কবরে সালাম দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুশীলন হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি মৃত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং তাদের জন্য দোয়া করার একটি উপায়। 

কবর জিয়ারতের সময়, বিশেষ কিছু দোয়া পাঠ করা হয়, যা মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি এবং মুক্তির জন্য প্রার্থনা করে। কবরে সালাম দেওয়ার সময় পাঠ করা একটি সাধারণ দোয়া হলো: (আস্‌সালামু আলাইকুম আহলাদ্‌দিয়ারি মিনাল্‌মু'মিনীনা ওয়াল্‌মুসলিমীনা, ওয়া ইন্না ইন শাআল্লাহু বিকুম লাহিক্কুন, নাসআলুল্লাহা লানা ওয়ালাকুমুল আফিয়াহ)। 

এই দোয়ার অর্থ হলো, "হে কবরের বাসিন্দারা, মুমিন ও মুসলিম ভাইয়েরা, তোমাদের প্রতি সালাম। আমরা ইনশাআল্লাহ তোমাদের সাথে যোগ দিব, আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের এবং তোমাদের জন্য আফিয়াত কামনা করি। এই দোয়াটি মৃত ব্যক্তিদের প্রতি শান্তি এবং সম্মানের প্রতীক হিসেবে পাঠ করা হয়। এটি মৃত্যুর পরে জীবনের অস্থায়িত্ব এবং পরকালের বিশ্বাসের প্রতিফলন করে।

মুসলিমরা বিশ্বাস করেন যে, এই দোয়া পাঠ করে তারা মৃত ব্যক্তিদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা এবং শান্তি প্রার্থনা করতে পারেন।

কবর জিয়ারতের দোয়া ও মোনাজাত জেনে নিন

মৃত্যু ব্যাক্তির শান্তি কামনার জন্য কবর জিয়ারত করা হয়। কিন্তু অনেকেই কবর জিয়ারতের দোয়া জানে না তাই কবর জিয়ারত করে না। আপনাদের কবর জিয়ারতের দোয়া ও মোনাজাত জানাতে এই আর্টিকেল।এর আগে জেনেছি লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম। এখন জানবো কবর জিয়ারতের দোয়া ও মোনাজাত।মৃত্যু, একটি অনিবার্য সত্য যা প্রত্যেক জীবনের শেষ গন্তব্য।

ইসলামে, মৃত্যুর পর মানুষের আত্মা পরকালে চলে যায় এবং শরীর মাটির মধ্যে সমাহিত হয়। কবর জিয়ারত হলো একটি ধর্মীয় অনুশীলন যা মুসলিমরা মৃত আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুদের স্মরণে করে থাকেন। এই জিয়ারতের সময় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পাঠ করা হয়, যা মৃতের আত্মার শান্তি এবং মুক্তির জন্য প্রার্থনা করে।

কবর জিয়ারতের সময় পাঠ করা হয় এমন কিছু দোয়া হলো:তাসবিহ:সুবহানাল্লাহ"(আল্লাহ পবিত্র)তাহমিদ :আলহামদুলিল্লাহ" (সকল প্রশংসা আল্লাহর)তাকবির:আল্লাহু আকবার" (আল্লাহ সবচেয়ে বড়)দোয়া : "আল্লাহুম্মাগফির লিহায়্যিনা ওয়া মায়্যিতিনা(হে আল্লাহ, আমাদের জীবিত এবং মৃতদের ক্ষমা করুন)মোনাজাতের সময় মুসলিমরা আন্তরিকভাবে।

আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন যেন মৃত ব্যক্তির আত্মা জান্নাতের উচ্চ মর্যাদা প্রাপ্ত হোক এবং তার পাপমুক্তি ঘটুক। এই মোনাজাত হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারিত হয় এবং এটি মৃতের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার প্রকাশ বহন করে।কবর জিয়ারত কেবল মৃতের জন্য দোয়া ও মোনাজাতের একটি উপায় নয়, বরং এটি জীবিতদের জন্যও একটি শিক্ষা। 

এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে জীবন অনিত্য এবং প্রত্যেকেরই একদিন মৃত্যুর সাথে মুখোমুখি হতে হবে। তাই, আমাদের উচিত সত্য ও ন্যায়ের পথে চলা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা।

পিতা মাতার কবর জিয়ারতের দোয়া জেনে নিন

প্রথম থেকে আলোচনা করে আসছি লাশের খাটিয়া বহন করার নিয়ম। এখন জানবো পিতা মাতার কবর জিয়ারতের দোয়া। ইসলাম ধর্মে, পিতা-মাতার কবর জিয়ারত করা একটি গভীর আধ্যাত্মিক অনুশীলন এবং শ্রদ্ধার প্রকাশ। এটি না শুধু মৃত আত্মার প্রতি সম্মান জানানো, বরং এটি জীবিতদের জন্যও একটি শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা। 

কবর জিয়ারতের সময়, বিশেষ দোয়া পাঠ করা হয় যা মৃতের আত্মার শান্তি এবং মুক্তির জন্য প্রার্থনা করে। পিতা-মাতার কবর জিয়ারতের সময় পড়া একটি সাধারণ দোয়া হলো: আল্লাহুম্মাগফির লি ওয়ালিওয়ালিদায়া ওয়ারহামহুমা কামা রাব্বায়ানি সগিরা। এর অর্থ হলো, "হে আল্লাহ, আমাকে এবং আমার পিতা-মাতাকে ক্ষমা করুন এবং তাদের।

প্রতি দয়া করুন, যেমন তারা আমাকে ছোটবেলায় লালন করেছেন। এই দোয়াটি পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ভালোবাসার প্রকাশ করে এবং তাদের আত্মার জন্য শান্তি ও মুক্তির প্রার্থনা করে। এটি একটি সহজ কিন্তু শক্তিশালী দোয়া যা প্রতিটি মুসলিমের হৃদয়ে গভীর অনুভূতি জাগায়। কবর জিয়ারতের মাধ্যমে, আমরা নিজেদের।

জীবনের অস্থায়িত্ব এবং পরকালের প্রতি সচেতন হই। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে জীবন অনিত্য এবং প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। তাই, আমাদের উচিত প্রতিটি কাজে আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুসন্ধান করা এবং সৎ জীবন যাপন করা।

শেষকথা:প্রিয় পাঠক, আমি আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে লাশের খাটিয়া বহন করার প্রচলিত নিয়ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিয়েছে। এই প্রথা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি আমাদের সমাজের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির অংশ। মৃত্যুর পর শেষ বিদায়ের সময় আমরা যে শ্রদ্ধা এবং সম্মান প্রদর্শন করি, তা আমাদের মানবিকতার প্রতিফলন। 

আমি আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা এই প্রথার গুরুত্ব এবং এর মাধ্যমে যে শিক্ষা পাওয়া যায়, তা উপলব্ধি করতে পারবেন। মৃত্যু হল জীবনের এক অনিবার্য সত্য, এবং এই প্রথা আমাদের শেখায় যে প্রতিটি জীবনের শেষে আছে এক শান্তিময় অধ্যায়ের সমাপ্তি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মেনি মেমোরি; রি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url